সজিব রেজা দিনাজপুর
শস্য ভান্ডার খ্যাত দিনাজপুরের ঘোড়াঘাটে মাঠ জুড়ে সবুজের সমারহ। মাঠ ভরা আলুর সবুজ গাছ দিয়ে। ফলন দ্বিগুণের আশায় শেষ মুহুর্তে পরির্চায় ব্যস্ত সময় পার করছেন কৃষকরা।
উপজেলা কৃষি অধিদপ্তর সূত্রে জানা যায়, চলতি রবি মৌসুমে ঘোড়াঘাটে ১টি পৌরসভা ও ৪টি ইউনিয়নে ২ হাজার ২৫০ হেক্টর জমিতে আলু চাষ করা হয়েছে। আগাম জাতের আলুর বাম্পার ফলন হয়েছে এবং দামও ভালো। অতীতের চেয়ে এবার আলুর চাষ অনেক বেশি হয়েছে। এবার আলুর উৎপাদন বেশী হবে বলে আশা করছেন উপজেলা কৃষি অফিস এবং চাষীরা।
উৎপাদিত আলু উপজেলার চাহিদা পূরণ করে উপজেলার বাহিরে সরবরাহ করা হচ্ছে। বর্তমানে বাজারে প্রতি মণ ১ হাজার টাকা থেকে ১ হাজার ১০০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে।
আলু চাষিরা জানান, জমি থেকে আলু তুলতে শ্রমিকদের খরচ বহন করতে হিমশিম খেতে হয়। এছাড়া উপজেলার বাহিরে ব্যবসায়ীদের সঙ্গে যোগাযোগ করতে না পারায় স্থানীয় মধ্যস্বত্ব ভোগীদের কাছে আলু বিক্রয় করতে হয়। ফলে কৃষকের চেয়ে বেশি লাভবান হচ্ছেন মধ্যস্বত্ব ভোগী আলু ব্যবসায়ীরা।
উপজেলার ভর্নাপাড়া গ্রামের আলু চাষি মোঃ মাসুদ বলেন, হঠাৎ বাজারে আলুর দাম কমে যাওয়ায় তেমন লাভ হচ্ছে না। গত কয়েকদিন আগেও প্রতি বস্তা (৮০ কেজি) আলু প্রকার ভেদে ৩ হাজার থেকে ৩ হাজার ৫০০টাকা বস্তা বিক্রি হয়েছে। এখন আলু বিক্রি হচ্ছে প্রতি বস্তা (৮০ কেজি) ১ হাজার ৮০০ টাকা থেকে 2 হাজার টাকা।
একই এলাকার আলু চাষি রহমান বলেন, দুই বিঘা জমিতে আলু চাষ করেছি, এখনো আলু তোলা শেষ হয়নি, সম্পূর্ণ আলু তোলার পর বোঝা যাবে লাভ ক্ষতি। অনেক আলু চাষি তাদের জমি থেকে সরাসরি মধ্যস্বত্ব ভোগী আলু ব্যবসায়ীদের কাছে বিক্রি করায় তেমন একটা লাভ করতে পারতেছেন না।
উপজেলার রাণীগঞ্জ বাজারের মধ্যস্বত্ব ভোগী আলু ব্যবসায়ী আঃ লতিফ বলেন, আমরা কৃষকের জমি থেকে আলু কিনে ভ্যানে করে নিয়ে গিয়ে পরিষ্কার করে বস্তায় তুলি তারপর ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন জেলায় সরবরাহ করি। এখানে শ্রমিকদের খরচ দিয়েও মোটামুটি ভালোই লাভ হয়।
উপজেলা কৃষি অফিসার মোঃ রফিকুজ্জামান বলেন, এবার আবহাওয়া অনুকূলে থাকায় ও শৈত্যপ্রবাহ কম হওয়ায় আলুর বাম্পার ফলন হয়েছে। এছাড়াও কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের মাঠ পর্যায়ের কর্মকর্তা-কর্মচারীরা কৃষকদের কাছে গিয়ে আলুর ফলন বৃদ্ধি করতে পরামর্শ দিয়ে যাচ্ছে। আগামীতেও আলুর বেশি উৎপাদনের জন্য কৃষকদের নিয়ে বিভিন্ন কর্মসূচি নেওয়া হবে।
তিনি আরো বলেন, চলতি মৌসুমে আগাম জাতের আলু প্রায় ১ মাস পূর্বেই উত্তোলন শুরু করা হয়েছে। ফলন দাম ভালো পেয়েছেন চাষীরা। আলু চাষাবাদে মুজুরী খরচ, কীটনাশক, সার ও সেচ খরচ কম লাগে ফলে আলুর চাষ লাভ জনক। আলু চাষ লাভ জনক হওয়ায় আলু চাষীরা প্রতি বছর আলু চাষ করে থাকেন। মানুষের শরীরের শর্করার চাহিদা মেটাতে আলু ভাতের পাশাপাশি পুষ্টি চাহিদা পূরণ করে।

এই সময়ের মধ্যে নির্বাচন করা সম্ভব বলে কি আপনি মনে করেন?