মজনুর রহমান আকাশ,মেহেরপুর
মেহেরপুরে এবার সরিষা চাষের বিপ্লব ঘটেছে। কৃষকরা এখন সরিষা চাষের দিকে ঝুঁকে পড়ছে। কৃষি বিভাগ থেকেও সরিষা চাষে উদ্বুদ্ধ করা হচ্ছে চাষিদের। ফলে এ উপজেলার বিভিন্ন স্থানের সবুজের মাঠজুড়ে হাতছানি দিচ্ছে মনোমুগ্ধকর হলুদ রঙের সরিষা ফুলের। ফুলে ফুলে শোভা পাচ্ছে সরিষার মাঠ। এদিকে সরিষা চাষ হওয়ায় অনেকেই মৌচাষ করছেন।
কৃষি বিভাগ বলেছে, সরিষা চাষিদের সর্বাত্মক পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে। এছাড়া সরকারি প্রণোদনাও দেওয়া হয়েছে চাষিদের। অন্যদিকে চাষিরা বলছেন, চাষাবাদে অন্যান্য ফসলের চেয়ে খরচ এবং শ্রম কম লাগে অথচ ফলন ও লাভ বেশি। এদিকে সরিষার ফুল চাষি এবং লোকজনের কাছে আর্কষণীয় হওয়ায় অনেকে সখের বশেও আবাদ করছেন। মেহেরপুর জেলা কৃষি অফিসের হিসেব মতে, গত মৌসুমে এ জেলায় ৭৫০০ হেক্টর জমিতে সরিষার আবাদ হয়েছে। এবার সরিষার আবাদ বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৭৫৫০ হেক্টর জমিতে। যা গেল বছরের চেয়ে ৫০ হেক্টর বেশি। সরিষার আবাদ বাড়াতে কৃষকদের সরকারিভাবে ৭০০০ জন চাষিকে প্রণোদনা হিসেবে বীজ ও সার দেয়া হয়েছে। চাষিদেরকে উন্নত মানের বীজ সরবরাহ করা হয়। এ ছাড়াও চাষিরা দেশী জাতের সরিষা আবাদ করছেন।
উপজেলার জুগিরগোফা গ্রামের কৃষক বারেক, রফিকুল, কামারখালি গ্রামের নবী উল্যাসহ কয়েকজন কৃষক জানান, সরিষা লাভজনক ফসল। দুই থেকে আড়াই মাসের মধ্যে ক্ষেত থেকে ফলন উঠে। আমন ধান কাটার সাথে সাথেই তারা জমি চাষ দিয়ে বীজ বপন করেছেন। সরিষা উঠে গেলে ওই জমিতে অন্যান্য জাতীয় শস্য আবাদ করতে পারবেন। তাই এ সময়টাতে অন্য ফসলের চেয়ে সরিষা চাষাবাদকে তারা উত্তম মনে করছেন। চাষাবাদে তারা বীজ এবং সার সরকারিভাবে পেয়েছেন। একই এলাকার কৃষক নুরুল আলম জানান, ৩৩ শতাংশ জমিতে সরিষার আবাদ করেছেন। এতে খরচ হয়েছে ৫ হাজার টাকার মতো। গাছে গাছে ফুলে পরিপূর্ণ হয়ে গেছে। এ অঞ্চলে এবার সরিষার ফলন ভালো দেখা যাচ্ছে। সোহেল হোসেন নামে আরেক সরিষা চাষি জানান, তিনি ১ একর ৫৫ শতাংশ জমিতে সরিষার আবাদ করেছেন। এতে ব্যয় হয়েছে ৭ হাজার টাকা। এবার চাষাবাদ ভালো হয়েছে তার।
মালসাদহ গ্রামের কিশোর সানিম হোসেন জানান, আমাদের এলাকায় প্রচুর পরিমাণে সরিষার চাষ হয়েছে। ক্ষেতগুলো ফুলে ফুলে ভরে গেছে। সবুজ মাঠ এ হলুদে পরিপূর্ণ হয়ে আছে। সৌন্দর্য্য ছড়াচ্ছে সরিষার মাঠ। বিভিন্ন এলাকা থেকে লোকজন সরিষা ক্ষেত দেখতে আসছেন এবং ক্ষেতের ছবি তুলে নিচ্ছেন। মেহেরপুর কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক বিজয় কৃষ্ণ হালদার জানান, এবার অন্যান্য মৌসুমে চেয়ে সরিষার আবাদ বেশি হয়েছে। কৃষি বিভাগ থেকে মাঠের চাষিদের পরামর্শ এবং সরকারি সহায়তা দেওয়া হচ্ছে।