মঙ্গলবার, ২১ জানুয়ারী ২০২৫
৭ মাঘ, ১৪৩১

পরিক্ষামূলক সংস্করণ

সারাদেশ

আলুর বাম্পার ফলনের আশায় কৃষক কিষাণীর মুখে হাসি

নিউজ ডেস্ক

প্রকাশঃ ২৭ ডিসেম্বর ২০২৪, ২২:২৬

আলুর বাম্পার ফলনের  আশায় কৃষক কিষাণীর মুখে  হাসি

ছাইদুল ইসলাম (নওগাঁ) প্রতিনিধি 

শস্য ভান্ডার খ্যাত নওগাঁর বরেন্দ্র উপজেলা হিসেবে পরিচিত ধামইরহাটে, চলতি রবি মৌসুমে আবহাওয়া অনুকূলে থাকায় আলুর বাম্পার ফলন হয়েছে। এতে করে কৃষকদের মুখে ফুটেছে হাসি। উপজেলার বিস্তীর্ণ ফসলের মাঠে অধিক ফলনের পাশাপাশি হাট বাজারে ভালো দামে আলু বেচাকেনা হওয়ায় অর্থনৈতিকভাবে লাভবান হওয়ার স্বপ্ন দেখছেন কৃষকরা।
শুক্রবার (২৭ ডিসেম্বর) বেলা সাড়ে এগারোটার সময় উপজেলার ইসবপুর ইউনিয়ন, জাহানপুর,  আড়ানগর, খেলনাসহ ৮ ইউনিয়নের বিভিন্ন এলাকার মাঠ জুড়ে সবুজ গাছের শেকড়ে শোভা পাচ্ছে উফসী কারেজ (বারি আলু ২৯),
স্থানীয় জাতের সাদা পাকড়ী, লাল পাকড়ী ও শীলবিলাতিসহ বিভিন্ন জাতের আলু। এসব এলাকায় এবার আগাম জাতের আলু চাষ করেছেন কৃষকরা। আর কদিন বাদে দল বেঁধে কৃষাণ, কিষাণীরা সেই আলু মাঠ থেকে উত্তোলন শুরু করবেন। একারণে আলু উত্তোলনের আগ মুহূর্তে এসে পোকামাকড় নিধনে ব্যস্ত সময় পার করছেন কৃষকরা।
স্থানীয় আলু চাষিরা জানান, “চলতি রবি মৌসুমে আলু বিজের ভীষণ সংকট ছিল। দামও ছিল চড়া। এত দাম দিয়ে আলুর বীজ রোপন করে ভালো দাম পাবেন কিনা তার শঙ্কাও ছিল। তবে আলু উত্তোলনের আগে, ভালো দাম পাওয়ায় অর্থনৈতিকভাবে লাভবান হওয়ার স্বপ্ন দেখছেন। তবে বাজার মনিটরিংয়র মাধ্যমে কৃষকেরা যেন আলুর ন্যায্য মূল্য পান তার দাবি জানান তারা।”
কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের তথ্যমতে জানা গেছে, কৃষক পর্যায়ে প্রশিক্ষণ ও উদ্বুদ্ধ করনের মাধ্যমে চলতি রবি মৌসুমে উপজেলায় আলু চাষ বৃদ্ধি পেয়েছে। এগুলোর মধ্যে উফসী জাতের কারেজ (বারি আলু ২৯) আলু, ডায়মন্ট (বাড়ি আলু ৭), এস্ট্রোরিক্স (বাড়ি আলু ২৫), রোমানা, কার্ডিনাল, গ্রানোলা (বাড়ি আলু ১৩), কুফরি সুন্দরী (বাড়ি আলু ১০) জাতের আলু এবং স্থানীয় জাতের সাদা পাকড়ী, লাল পাকড়ী এবং  শীলবিলাতি জাতের আলু উল্লেখযোগ্য।
আলু চাষি মোফাজ্জল বলেন, চলতি বছরের নভেম্বর মাসে দুই বিঘা জমিতে ক্যারেজ ও স্টীক জাতের আলুর বীজ রোপন করেন। এতে করে লেবার, সার, বিষ, পানিসহ ৭০ হাজার টাকা খরচ করতে হয়েছে। ফলন ভালো হওয়ায় ৮ থেকে ১০ দিনের মাথায় ক্ষেত থেকে আলু উত্তোলন শুরু করবেন।
তিনি আরও বলেন, দুই বিঘা জমিতে আলু চাষ করা হয়েছে। পাবেন প্রায়১৬০ মন। বর্তমানে পাইকারী বাজারে ৪৫ টাকা কেজি দরে ৩ লাখ টাকায় আলু বিক্রি করা সম্ভব হবে। সব খরচ বাদ দিয়ে লাভ হবে প্রায় ১ লাখ ৪০ হাজার টাকা। এতে করে অর্থনৈতিকভাবে লাভবান হওয়ার স্বপ্ন দেখছেন মোফাজ্জল।
আলমপুর ইউনিয়নের চকভাইকা গ্রামের আলু চাষি মতিবুল ইসলাম বলেন, এবার বড়ো দাগে ৬ বিঘা জমিতে আলু চাষ করেছেন। আলুর বীজ, লেবার, সার, বিষ সব মিলিয়ে দুই মাসে তাকে খরচ করতে হয়েছে প্রায় ৪ লাখ ৮০ হাজার টাকা। এতে করে আলু পাবেন ৫০০ মন। পাইকারি বাজারে ৪৫ টাকা কেজি দরে যার বাজার মূল্য ৯ লাখ টাকা। এতে করে সব বাদ  দিয়ে  প্রায় ৪ লাখ ৮০ হাজার টাকা আয় করবেন বলে জানান।
উপজেলা কৃষি অফিসার তৌফিক আল জুবায়ের বলেন, ধামইরহাটে ২১০৫ হেক্টর জমিতে আলু চাষের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে। উৎপাদন হয়েছে প্রায় ৩৩৫৭ হেক্টর মেট্রিক টন। এগুলোর মধ্যে উফসী জাতের আলু ২৯৭৭ হেক্টর ও স্থানীয় জাতের আলু ৩৮০ হেক্টর মেট্রিক টন।

এ সম্পর্কিত আরো খবর

আলু রোপণ উৎসবে ব্যস্ত কৃষক

আলু রোপণ উৎসবে ব্যস্ত কৃষক

০৭ ডিসেম্বর ২০২৪