শুক্রবার, ১৮ জুলাই ২০২৫

পরীক্ষামূলক সংস্করণ

সারাদেশ

সাবেক আইনমন্ত্রীর এপিএস জীবনের হিসাবহীন সম্পদের পাহাড়

সাবেক আইনমন্ত্রী আনিসুল হকের এপিএস হয়ে দুহাতে উপার্জন করেছেন অবৈধ অর্থ। আর অবৈধ সম্পদে নিজের জীবনই পালটে ফেলেন রাশেদুল কাওসার ভূঁইয়া জীবন। এলাকায় মাদকের কারবার থেকে শুরু করে ভারতীয় গরু পাচার, টেন্ডারবাজি এবং বদলি বাণিজ্যে একচ্ছত্র নিয়ন্ত্রণ ছিল তার। ব্রাহ্মণবাড়িয়ার কসবা ও আখাউড়া দুটি উপজেলা মিলিয়ে ব্রাহ্মণবাড়িয়া-৪ আসন। আনিসুল হক এই আসনের এমপি ছিলেন। কসবা […]

নিউজ ডেস্ক

২২ ডিসেম্বর ২০২৪, ১১:৩৬

সাবেক আইনমন্ত্রী আনিসুল হকের এপিএস হয়ে দুহাতে উপার্জন করেছেন অবৈধ অর্থ। আর অবৈধ সম্পদে নিজের জীবনই পালটে ফেলেন রাশেদুল কাওসার ভূঁইয়া জীবন। এলাকায় মাদকের কারবার থেকে শুরু করে ভারতীয় গরু পাচার, টেন্ডারবাজি এবং বদলি বাণিজ্যে একচ্ছত্র নিয়ন্ত্রণ ছিল তার। ব্রাহ্মণবাড়িয়ার কসবা ও আখাউড়া দুটি উপজেলা মিলিয়ে ব্রাহ্মণবাড়িয়া-৪ আসন। আনিসুল হক এই আসনের এমপি ছিলেন। কসবা উপজেলায় সবকিছু চলতো তারই ব্যক্তিগত সহকারী (এপিএস) জীবনের ইশারায়।

২০১৪ সালে অনুষ্ঠিত নির্বাচনের পর থেকে টানা চার বছর আইনমন্ত্রী আনিসুল হকের এপিএস ছিলেন মো. রাশেদুল কাওসার ভূঁইয়া জীবন। এই পদের প্রভাব কাজে লাগিয়ে বাগিয়ে নেন কসবা উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যানের পদ। এরপর আর পেছন ফিরে তাকাতে হয়নি তাকে। উপজেলা চেয়ারম্যান থাকা অবস্থায় বাগিয়ে নেন কসবা উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদকের পদ। এই দুই পদে থেকে ক্ষমতার অপব্যবহার করে বুলেটের গতিতে করেছেন শত কোটি টাকার সম্পদ। আনিসুল হকের ছত্রছায়াতেই কসবার একক ‘শাসনকর্তা’ বনে যান তিনি। অপরাধ জগৎ নিয়ন্ত্রণে জীবন গড়ে তোলেন নিজস্ব এক বাহিনী।

নয়নপুর বাজারের পশ্চিম পাশে সরকারের খাস জায়গায় ও পানি উন্নয়ন বোর্ডের জায়গায় জীবন ৪৫টি দোকান নির্মাণ করেছেন। এসব দোকান থেকে তিনি ৫ থেকে ৮ লাখ টাকা পর্যন্ত অগ্রিম নিয়েছেন। বায়েক ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক ও কসবা উপজেলা মৎস্যজীবী লীগের সভাপতি উত্তম কুমার চক্রবর্তীকে দিয়ে তিনি এই টাকা উত্তোলন করেছেন। এলাকায় জীবনের ‘ক্যাশিয়ার’ হিসাবে পরিচিত ছিলেন উত্তম। জীবনের অপকর্মের সহযোগী হওয়ার কারণে এখন এলাকা থেকে পালিয়েছেন তিনি।

চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক ছাত্রলীগ ক্যাডার ও ক্যাম্পাসে খুনের দায়ে অভিযুক্ত স্থানীয় যুবলীগ নেতা আজমলের মাধ্যমে সীমান্তের ওপারের সঙ্গে গড়ে তুলেছেন মাদক পাচার সিন্ডিকেট। ১০ বছর ধরে এই সিন্ডিকেট কোটি কোটি টাকার মাদকের কারবার করেছে। এই চক্র থেকে প্রতি মাসে ৩০ লাখ টাকা নিতেন এপিএস জীবন। আজমলের নেতৃত্বাধীন সিন্ডিকেট ভারত থেকে গরু পাচারের সঙ্গেও জড়িত ছিল। ভারতের ত্রিপুরা রাজ্যের সিপাহীজলা জেলার সীমান্তবর্তী কসবা উপজেলার উঁচু টিলাসমৃদ্ধ নির্জন জনপদ মাদলা, খাদলা, গৌরাঙ্গলা, শ্যামপুর ও পুটিয়া দিয়ে দিনে-রাতে সমানে গরু পাচার হয়ে আসত বাংলাদেশে। সীমান্তের ওপার থেকে গরু পাচার নির্বিঘ্ন করতে জীবনকে বছরে দুই কোটি টাকা দিতে হতো।

জীবন আইনমন্ত্রীর এপিএস থাকাকালীন ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে ১০ জন ইউপি চেয়ারম্যানের কাছ থেকে ৫০ লাখ টাকা করে নিয়েছেন। ২০১৬ সালের ইউপি নির্বাচনে বায়েক ইউনিয়নের আওয়ামী লীগ দলীয় প্রত্যেক মেম্বার প্রার্থীর কাছ থেকেও ৫ লাখ টাকা করে নিয়েছেন। সংশ্লিষ্ট প্রার্থীরা এসব তথ্য দিয়েছেন। এলাকার বিএনপির বহু নেতাকর্মী, এমনকি নিজ দল আওয়ামী লীগের অনেক নেতাকর্মীও ভয় আর আতঙ্ক নিয়ে বাড়ি ছেড়ে পালিয়ে প্রাণে রক্ষা পেয়েছেন। আবার কেউ রাজনীতি না করে চুপচাপ সময় কাটিয়েছেন। এলাকার অসংখ্য সাধারণ মানুষের জীবন তছনছ করেছেন এই জীবন। নিজ দল আ.লীগের কোনো নেতাকর্মী তার মতের বিরুদ্ধে কথা বললে হুমকি, মারধর, মামলাসহ এলাকাছাড়া করা হতো। এক কথায় তার ভয়ে পুরো কসবা থরথর করে কাঁপত।

কসবার বায়েক ইউনিয়নের বর্তমান চেয়ারম্যান মোহাম্মদ বিল্লাল হোসেন বলেন, এপিএস জীবনের বিভিন্ন অপকর্মের প্রতিবাদ করায় আমার নামে ৪টা মিথ্যা মামলা দেন তিনি। আমার ৩ ভাইকেও মামলা দিয়ে বছরের পর বছর হয়রানি করা হয়।

কসবার নয়নপুরের হুমায়ুন নামে এক ব্যক্তি ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, জীবন তার ক্ষমতার দাপটে আমার পরিবার ও আত্মীয়স্বজনসহ ১৩৭ জনের নামে মিথ্যা মামলা দিয়েছেন। জীবন তার নিজ গ্রাম কোনাঘাটার জনৈক নিদান মিয়ার কাছ থেকে জোরপূর্বক নামমাত্র টাকা দিয়ে ৭০ শতক জায়গা লিখে নিয়েছেন।

কসবা উপজেলার বায়েক ইউনিয়নের কোনাঘাটা গ্রামের বাসিন্দা জীবনের বাবা আবদুর রশিদ ভূঁইয়া ছিলেন প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষক এবং তার মা ওয়াহিদা শিরিন ছিলেন পরিবার পরিকল্পনা বিভাগের আয়া। ২০১৮ সালেও জীবনের তেমন সম্পদ ছিল না। স্থানীয় একাধিক সূত্র জানায়, ত্রিপুরা সীমান্তসংলগ্ন কসবা রেলস্টেশনের পশ্চিম পাশে জীবন ডুপ্লেক্স বাড়ি করেছেন। ৫ জানুয়ারি আওয়ামী লীগের পতনের পর এটি পুড়িয়ে দেওয়া হয়েছে। অভিযোগ রয়েছে, এ বাড়ি থেকে প্রতি রাতে কোটি টাকার চোরাচালান পণ্য বাংলাদেশ ও ভারতে আনা-নেওয়া এবং মাদক কারবার পরিচালনা করা হতো। সাবরেজিস্টার পদে বদলির জন্য ৮০ লাখ থেকে ১ কোটি টাকা নিতেন জীবন।

নিজ ইউনিয়নের নয়নপুর বাজারে পানি উন্নয়ন বোর্ডের জায়গায় জীবন দুটি মার্কেট গড়েছেন। এরপর পজিশন বিক্রি করে হাতিয়ে নিয়েছেন প্রায় ১০ কোটি টাকা। নয়নপুর গরুর হাটের ইজারার ৫০ শতাংশ টাকা নিজের পকেটস্থ করেছেন। ব্রাহ্মণবাড়িয়া শহরে স্ত্রী ও নিজের নামে ১০ শতাংশের দুটি প্লট কিনেছেন। নামমাত্র মূল্যে কসবার বায়েক ইউনিয়নের মাদলা গ্রামে প্রায় ১০ একর পাহাড় কিনেছেন। শ্বশুরবাড়ি আখাউড়ার ছতুরা শরীফ গ্রামে স্ত্রী নিলুফার নামে কিনেছেন ১০ বিঘা জমি।

জীবন বছর পাঁচেক আগে ঢাকার ১৬৪ নম্বর আরামবাগে ছয়তলা বাড়ি কেনেন। রাজধানীর উপকণ্ঠ কেরানীগঞ্জে কারখানা করার উদ্দেশে কিনেছেন এক একর জমি। জীবন তার যুক্তরাজ্য প্রবাসী ভাইয়ের মাধ্যমে বিপুল অর্থ বিদেশে পাচার করেছেন বলেও অভিযোগ রয়েছে।

কেন্দ্র দখলের মাধ্যমে জীবন ছাত্রলীগের সাবেক উপজেলা সভাপতি এমরান উদ্দিন জুয়েলকে কসবা পৌরসভার মেয়র বানান। জুয়েলের মাধ্যমেই এলাকায় গড়ে তোলা হয় ‘জীবন বাহিনী’। এ বাহিনীর অত্যাচার-নির্যাতন থেকে রেহাই পাননি বিরোধী দল এমনকি আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীও। জীবনের নির্দেশে এমরান উদ্দিন জুয়েল, উপজেলা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক মনির হোসেনসহ অনেকে দুবারের সাবেক এমপি মোহাম্মদ শাহ আলমকে শারীরিকভাবে লাঞ্ছিত করেন। এরপর দীর্ঘ ১৫ বছর ওই সাবেক সংসদ-সদস্যকে এলাকায় ঢুকতে দেওয়া হয়নি।

সাবেক সংসদ-সদস্য মো. শাহ আলম বলেন, গত ১৫ বছর আমাকে এলাকায় ঢুকতে দেননি জীবন। মিথ্যা মামলা দিয়েছেন। আনিসুল হকের অপকর্মের প্রধান হাতিয়ার ছিলেন জীবন। আনিসুল হক সবকিছু নিয়ন্ত্রণ করতেন জীবনের মাধ্যমে।

জীবনের মাস্তান বাহিনীতে ছাত্রলীগ নেতা এমরান উদ্দিন জুয়েল, মনির হোসেন, রিমন খান, কাজী মানিক, এমদাদুল হক পলাশসহ অনেকে রয়েছেন। তারা এলাকায় মাদক কারবার, টেন্ডারবাজি, সীমান্তে ভারতীয় গরুর হাট নিয়ন্ত্রণ করতেন। এ বাহিনী সাবেক কেন্দ্রীয় যুবলীগ নেতা শ্যামল কুমার রায়, বাংলাদেশ-ভারত মৈত্রী সমিতির সাধারণ সম্পাদক নারায়ণ চন্দ্র সাহা মনি, বিশিষ্ট শিল্পপতি এ কে এম বদিউল আলমসহ অনেককে নিজ জন্মভূমি কসবায় প্রবেশে নিষেধাজ্ঞা দিয়েছিল। কেউ টুঁ শব্দ করলেই তার ওপর নেমে আসত নির্যাতনের খক্ষ।

অবশেষে ১৯ অক্টোবর রাতে রাজধানীর কাকরাইল এলাকার একটি বেসরকারি হাসপাতাল থেকে জীবনকে পাকড়াও করে পুলিশ। গত দুই বছর আগে বিএনপির নয়াপল্টন কার্যালয়ে পুলিশি অভিযানের সময় গুলিতে দলটির কর্মী মকবুল হোসেন নিহতের মামলায় তাকে গ্রেফতার দেখানো হয়। গ্রেফতারের পর থেকে এখন পর্যন্ত তিনি কারাগারে রয়েছেন।

সারাদেশ

ব্রাহ্মণবাড়িয়া সীমান্তে বিএসএফের গুলিতে বাংলাদেশি নিহত, ভারতীয় গুলিবিদ্ধ

ব্রাহ্মণবাড়িয়ার কসবা উপজেলার মাদলা সীমান্তে ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনী বিএসএফের গুলিতে এক বাংলাদেশি কিশোর নিহত হয়েছে বলে জানিয়েছে স্থানীয় পুলিশ প্রশাসন। একই ঘটনায় গুলিবিদ্ধ অবস্থায় এক ভারতীয় নাগরিক বাংলাদেশে প্রবেশ করেন এবং বর্তমানে ঢাকার একটি বেসরকারি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন আছেন।

নিউজ ডেস্ক

০৫ মে ২০২৫, ১৬:১৯

ব্রাহ্মণবাড়িয়ার কসবা উপজেলার মাদলা সীমান্তে ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনী বিএসএফের গুলিতে এক বাংলাদেশি কিশোর নিহত হয়েছে বলে জানিয়েছে স্থানীয় পুলিশ প্রশাসন। একই ঘটনায় গুলিবিদ্ধ অবস্থায় এক ভারতীয় নাগরিক বাংলাদেশে প্রবেশ করেন এবং বর্তমানে ঢাকার একটি বেসরকারি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন আছেন।

রোববার (৪ মে) রাত প্রায় পৌনে ১২টার দিকে উপজেলার বায়েক ইউনিয়নের মাদলা সীমান্তে এ ঘটনা ঘটে। নিহত কিশোরের নাম মো. সাকিব (১৮)। তিনি কসবায় নন্দনগর গ্রামের বাসিন্দা এবং মো. মোতালেব মিয়ার ছেলে।

কসবা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আব্দুল কাদের জানান, রাতে বিএসএফ সদস্যদের ছোড়া গুলিতে সাকিব গুরুতর আহত হন। তাকে দ্রুত কুমিল্লা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়ার পথে রাত সাড়ে ১২টার দিকে তার মৃত্যু হয়। একই সময় এক অজ্ঞাতনামা ভারতীয় নাগরিক গুলিবিদ্ধ অবস্থায় সীমান্ত পেরিয়ে বাংলাদেশে প্রবেশ করেন। তাকে আশঙ্কাজনক অবস্থায় ঢাকায় পাঠানো হয় এবং বর্তমানে একটি বেসরকারি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন।

কসবা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) ছামিউল ইসলাম জানান, মাদলা সীমান্তে বাংলাদেশি কিশোর ও ভারতীয় নাগরিককে লক্ষ্য করে গুলি ছোড়ে বিএসএফ। তিনি বলেন,

“গুলিতে সাকিব নিহত হয় এবং অপর ভারতীয় নাগরিক গুলিবিদ্ধ অবস্থায় বাংলাদেশে চলে আসে।”

ঘটনার বিষয়ে ইউএনও আরও বলেন, প্রাথমিক তদন্তে জানা গেছে, সাকিব ও আহত ভারতীয় ব্যক্তি একটি মোটরসাইকেল চোরাচালান চক্রের সঙ্গে যুক্ত ছিল বলে ধারণা করা হচ্ছে। আইনশৃঙ্খলা বাহিনী ঘটনার বিস্তারিত তদন্ত শুরু করেছে।

এদিকে, সীমান্তে কিশোর নিহত ও অন্য একজনের গুলিবিদ্ধ হয়ে বাংলাদেশে অনুপ্রবেশের ঘটনায় এলাকাবাসীর মধ্যে উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়েছে। স্থানীয় জনপ্রতিনিধিরা সীমান্ত নিরাপত্তা জোরদার ও ঘটনার সুষ্ঠু তদন্তের দাবি জানিয়েছেন।

ঘটনাটি সম্পর্কে বিজিবি এখনো আনুষ্ঠানিকভাবে কোনো বিবৃতি দেয়নি, তবে ঘটনাস্থলে অতিরিক্ত সদস্য মোতায়েন করা হয়েছে এবং পরিস্থিতি নিবিড়ভাবে পর্যবেক্ষণ করা হচ্ছে।

সারাদেশ

মুরাদনগরে দরজা ভেঙে নারীকে ধর্ষণের অভিযোগ, কী ঘটেছিল

কুমিল্লার মুরাদনগরের একটি গ্রামে বসতঘরের দরজা ভেঙে এক নারীকে (২৫) ধর্ষণের অভিযোগ পাওয়া গেছে। এই ঘটনায় শুক্রবার দুপুরে মুরাদনগর থানায় মামলা করেছেন ওই নারী। পরে মামলার মূল আসামি ফজর আলীকে রাজধানীর সায়েদাবাদ থেকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। রোববার (২৯ জুন) সকালে বিষয়টি গণমাধ্যমকে নিশ্চিত করেছেন কুমিল্লা জেলা পুলিশ সুপার। মামলার এজাহার ও ভুক্তভোগী ওই নারীর সঙ্গে […]

মুরাদনগরে দরজা ভেঙে নারীকে ধর্ষণের অভিযোগ, কী ঘটেছিল

মুরাদনগরে দরজা ভেঙে নারীকে ধর্ষণের অভিযোগ, কী ঘটেছিল

নিউজ ডেস্ক

২৯ জুন ২০২৫, ০৯:৩৫

কুমিল্লার মুরাদনগরের একটি গ্রামে বসতঘরের দরজা ভেঙে এক নারীকে (২৫) ধর্ষণের অভিযোগ পাওয়া গেছে। এই ঘটনায় শুক্রবার দুপুরে মুরাদনগর থানায় মামলা করেছেন ওই নারী। পরে মামলার মূল আসামি ফজর আলীকে রাজধানীর সায়েদাবাদ থেকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। রোববার (২৯ জুন) সকালে বিষয়টি গণমাধ্যমকে নিশ্চিত করেছেন কুমিল্লা জেলা পুলিশ সুপার।

মামলার এজাহার ও ভুক্তভোগী ওই নারীর সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, প্রায় ১৫ দিন আগে স্বামীর বাড়ি থেকে বাবার বাড়িতে সন্তানদের নিয়ে বেড়াতে আসেন তিনি। বৃহস্পতিবার রাত আনুমানিক ১০টার দিকে ফজর আলী (৩৮) নামের এক ব্যক্তি তার বাবার বাড়ি গিয়ে ঘরের দরজা খুলতে বলেন। এ সময় তিনি দরজা খুলতে অস্বীকৃতি জানান। একপর্যায়ে ওই ব্যক্তি ঘরের দরজা ভেঙে ভেতরে ঢুকে তাকে ধর্ষণ করেন।

ওই নারী বলেন, টাকা ধার নেওয়া নিয়ে ফজর আলীর সঙ্গে তাদের পরিবারের পরিচয় ঘটে। এ সূত্র ধরেই ফজর আলী বাড়িতে প্রবেশ করে।

মুরাদনগরে ধর্ষণ মামলার প্রধান আসামি ফজর আলী গ্রেপ্তারমুরাদনগরে ধর্ষণ মামলার প্রধান আসামি ফজর আলী গ্রেপ্তার
ওই নারীর পাশের বাড়ির এক সদস্য বলেন, ‘বৃহস্পতিবার রাতে ওই বাড়িতে অনেক শব্দ হচ্ছিল। আমি ভয়ে দৌড়ে গিয়ে লোকজন ডেকে নিয়ে আসি। লোকজন গিয়ে দেখেন দরজা ভাঙা। পরে আমরা ভুক্তভোগীকে উদ্ধার করি।’

নাম প্রকাশ না করার শর্তে স্থানীয় এক ব্যক্তি বলেন, ঘটনার সময় ফজর আলীকে স্থানীয় লোকজন আটকে মারধর করেন। পরে তাকে কুমিল্লা শহরের একটি হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। ওই হাসপাতাল থেকে ফজর আলী পালিয়ে যান। পরে আজ তাকে ঢাকার সায়েদাবাদ থেকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ।

এ ঘটনার একটি ভিডিও ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়ে। এরপর এ নিয়ে সমালোচনা শুরু হয়।

মুরাদনগর থানার ওসি জাহিদুর রহমান বলেন, ফজর আলীকে আসামি করে মামলা হয়েছে। বাদির স্বাস্থ্য পরীক্ষাও শেষ।

এর পরই নারীকে ধর্ষণের ঘটনার ভিডিও ভাইরাল করা তিনজনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। রোববার (২৯ জুন) রাত দেড়টার দিকে কুমিল্লা জেলা পুলিশ সুপার নাজির আহমেদ খান স্বাক্ষরিত সংবাদ মাধ্যমে পাঠানো এক বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়। পরে আরও একজনকে গ্রেপ্তার করা হয়।

কুমিল্লা পুলিশের এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, ২৬ জুন রাতে মুরাদনগরের রামচন্দ্রপুর পাঁচকিত্তা গ্রামের ফজর আলী একজন প্রবাসীর স্ত্রীকে ধর্ষণ করার অভিযোগে এলাকার লোকজনের হাতে আটক ও প্রহৃত হন। পরবর্তী সময়ে আহত ফজর আলী সেখান থেকে পালিয়ে যান। ঘটনাস্থলে উপস্থিত কিছু লোক তাৎক্ষণিকভাবে ভিকটিমের ভিডিও ধারণ করে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে দেয়।

সারাদেশ

সৈনিকের ঝুলন্ত মরদেহ উদ্ধার, পাশেই ছিল বিশেষ চিরকুট

ওয়াশরুমে যাওয়ার কথা বলে প্রহরীর সঙ্গে বের হয়েছিলেন সৌরভ। কিন্তু দীর্ঘ সময় সাড়া না পেয়ে প্রহরীরা ও গার্ড কমান্ডার খুঁজতে শুরু করেন। এক পর্যায়ে দেখা যায়, ওয়াশরুমের জানালা খোলা। পরে ওয়ার্কশপ ভবনের পাশে কনস্ট্রাকশনের বাঁশের সঙ্গে গামছা পেঁচিয়ে গলায় ফাঁস লাগানো অবস্থায় তার মরদেহ পাওয়া যায়।

সৈনিকের ঝুলন্ত মরদেহ উদ্ধার, পাশেই ছিল বিশেষ চিরকুট

ছবি সংগৃহীত

নিউজ ডেস্ক

০১ জুন ২০২৫, ১৯:৪৬

গাজীপুরের রাজেন্দ্রপুর সেনানিবাসে এক মর্মান্তিক ঘটনার অবসান হলো রোববার (১ জুন) ভোরে। সেনানিবাসের ওয়ার্কশপ ভবন থেকে সৈনিক এসএম সৌরভ হোসেনের (৩৪) ঝুলন্ত মরদেহ উদ্ধার করেছে পুলিশ। জয়দেবপুর থানার ওসি আব্দুল হালিম জানিয়েছেন, এটি আত্মহত্যার ঘটনা বলে প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে।

সৌরভ হোসেন ঝিনাইদহ জেলার গাড়াগঞ্জ গ্রামের উজির আলী মোল্লার ছেলে। তিনি স্ত্রী, এক ছেলে ও এক মেয়েকে রেখে গেছেন। জানা যায়, কিছুদিন আগে বগুড়া সেনানিবাস থেকে রাজেন্দ্রপুর সেনানিবাসে এমপি (এপিসি) স্কট হিসেবে বদলি হয়েছিলেন।

পুলিশ জানায়, সম্প্রতি অনলাইন জুয়া খেলায় সর্বস্বান্ত হয়ে মানসিক চাপে ছিলেন সৌরভ। রোববার গোপনে ল্যান্স করপোরাল ইয়াসির আরাফাতের মোবাইল থেকে ১৪ হাজার টাকা বেটিং সাইটে জমা দেন। ইয়াসির আরাফাত বিষয়টি টের পেয়ে হাতেনাতে ধরে ফেলেন এবং লোকজন ডাকাডাকি করলে সৌরভকে শাস্তিস্বরূপ নজরবন্দি রাখা হয়।

ভোরে ওয়াশরুমে যাওয়ার কথা বলে প্রহরীর সঙ্গে বের হয়েছিলেন সৌরভ। কিন্তু দীর্ঘ সময় সাড়া না পেয়ে প্রহরীরা ও গার্ড কমান্ডার খুঁজতে শুরু করেন। এক পর্যায়ে দেখা যায়, ওয়াশরুমের জানালা খোলা। পরে ওয়ার্কশপ ভবনের পাশে কনস্ট্রাকশনের বাঁশের সঙ্গে গামছা পেঁচিয়ে গলায় ফাঁস লাগানো অবস্থায় তার মরদেহ পাওয়া যায়।

মরদেহের পাশে একটি বিশেষ চিরকুট উদ্ধার করা হয়েছে, যেখানে তিনি নিজের দোষ স্বীকার করে আত্মহত্যার কারণ লিখে গেছেন বলে পুলিশ জানায়। মরদেহটি শহীদ তাজউদ্দীন আহমদ মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল মর্গে পাঠানো হয়েছে ময়নাতদন্তের জন্য।

এ ঘটনায় সেনানিবাস ও পরিবারে শোকের ছায়া নেমে এসেছে। আত্মহত্যার পেছনের কারণগুলো খতিয়ে দেখছে পুলিশ।