মেহেদী হাসান মেহের (ব্রাহ্মণবাড়িয়া) প্রতিনিধি
ব্রাহ্মণবাড়িয়ার বাঞ্ছারামপুর উপজেলার সর্বত্রই অবাধে চলছে অনলাইনে জুয়া খেলা। এ পরিস্থিতিতে সামাজিক অবক্ষয়সহ যুবসমাজের নৈতিক চরিত্র ধ্বংসের মুখোমুখি হলেও দেখার যেন কেউ নেই। বিদ্যমান পরিস্থিতিতে এ সর্বনাশা খেলায় আসক্ত হয়ে উঠতি বয়সের স্কুল কলেজগামী শিশু কিশোর ও যুবক শিক্ষার্থীরা তাদের সোনালী সুন্দর ভবিষ্যত অন্ধকারে ডুবে ফেলে বিপদগামী হয়ে পড়ছেন। আবার অনেকেই এ-খেলায় সর্বস্ব হারিয়ে এখন পথে বসে পড়ছেন।
প্রতিনিয়ত সকাল থেকে গভীর রাত পর্যন্ত উপজেলার হাটবাজারে ও গ্রামগজ্ঞের আশপাশে প্রকাশ্যে অনলাইন জুয়া খেলা চলেছে। সর্বনাশা জুয়ার নেশায় অনেকেই বসতভিটাসহ সবকিছু হারিয়ে এখন দিশাহারা হয়ে পড়ছেন। জুয়ায় বিভোর হয়ে এসব জুয়ারিরা এখন কোন উপায় না পেয়ে জুয়ার টাকা জোগাড় করতে বিভিন্ন ধরনের অপরাধমূলক কর্মকাণ্ডে জড়িয়ে পড়ছেন। এমতবস্থায় উপজেলার বিভিন্ন স্থানে অহরহ ঘটছে চুরি, ডাকাতি ও ছিনতাইয়সহ নানা ধরনের অপরাধমূলক ঘটনা। সরেজমিন জানা গেছে, স্কুল কলেজগামী শিক্ষিত, অর্ধশিক্ষিত শিশু কিশোর, যুবকসহ বিভিন্ন বয়সের মানুষজন এখেলায় মেতে
উঠছেন। সাধারণত মোবাইলে অ্যাপসের মাধ্যমে এসব খেলা হয়ে থাকে বলে জানা গেছে। কিন্তু এর লেনদেন হয় মোবাইল ব্যাংকিংয়ের মাধ্যমে। সম্প্রতি আশঙ্কাজনকভাবে প্রকাশ্যে খেলাটি চলায় অনেক অভিভাবক তাদের উঠতি বয়সের সন্তানদের নিয়ে চরম দুশ্চিন্তায় পড়ছেন। উপজেলার ছলিমাবাদ ইউনিয়নের হোসেনপুর গ্রামের বাসিন্দা রোস্তম আলী, মতিউর রহমান জানায়, ‘আমাদের গ্রামের শতকরা অর্ধেক লোক বর্তমানে অনলাইন জুয়া খেলায় জড়িয়ে পড়েছে।
এদের মধ্যে দু একজন সাময়িক লাভবান হলেও বেশির ভাগ জুয়াড়ি সর্বস্বান্ত হয়ে পড়ছেন। এমনকি তারা দায়দেনায় জরাজীর্ণ হয়ে বাড়িঘর ছেড়ে পালিয়েছেন। প্রকাশ্যে এমন জুয়া খেলায় সামাজিক অবক্ষয়সহ যুবসমাজের নৈতিক চরিত্র ধ্বংসের দিকে ধাবিত হচ্ছে বলে তারা জানান। বাঞ্ছারামপুর থানার ওসি মোরশেদুল ইসলাম চৌধুরী জানান, মাদক, জুয়াসহ সব ধরনের অপরাধমূলক কর্মকাণ্ড নির্মূল করতে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী বদ্ধপরিকর। আর এসব কর্মকাণ্ডের সঙ্গে জড়িতদের ধরতে প্রতিনিয়ত আমাদের থানা পুলিশের অভিযান অব্যাহত আছে। তবে পুলিশের পাশাপাশি সমাজের সচেতন ব্যক্তিবর্গ, জনপ্রতিনিধি ও রাজনৈতিক দলের নেতাকর্মীদের সার্বিক সহযোগিতা কামনা করেন ওসি।