নেত্রকোণা প্রতিনিধিঃ
বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমীর মহাপরিচালক ড. সৈয়দ জামিল আহমেদ বলেছেন, বাংলাদেশ সবার, সকলের দেশ হবে। কোন এক ব্যক্তিকে কেন্দ্র করে বাংলাদেশ না। মুক্তিযুদ্ধ কোন এক ব্যক্তিকে কেন্দ্র করে হয়নি। গত ১৫ বছর ধরে এই ইতিহাসটা মুছে ফেলার চেষ্টা করা হয়েছে।
আজ শনিবার সকালে নেত্রকোণা জেলা শিল্পকলা একাডেমি পরিদর্শনে এসে সাংবাদিকদের সাথে এসব কথা বলেন তিনি।
তিনি আরও বলেন, ৭ই মার্চের ভাষণ আমরা শুনেছি গায়ের লোম দাঁড়িয়ে যায়। কিন্তু দীর্ঘ ১৫ বছর ধরে এমন ভাবে শুনিয়েছে যে একপর্যায়ে কান ঝালাপালা হয়ে মানুষ বিরক্ত বোধ হয়েছে।এটা বিগত সরকার বুঝতে পারেনি। মানুষ কি চায় সেটা সরকারকে বুঝতে হবে। জনগণ কি চায় সেটা যারা সরকারে থাকে তাদের বুঝতে হয়। যার যেটা প্রাপ্য তাকে সেই ক্রেডিট দিতে হয়। দেশের স্বাধীনতা আন্দোলনে বামপন্থীদের গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা ছিল। বাংলাদেশ এবং মুক্তিযুদ্ধে তাদের অবদানকে ভুলে গেলে চলবে না।
সৈয়দ জামিল আহমেদ আরও বলেন, তাজ উদ্দিন আহমেদ বড় একটা ভূমিকা পালন করেছিলেন। যাকে ছাড়া মুক্তিযুদ্ধ সংগঠিত হতো না। তিনি সংগঠিত করেছেন, একত্রিত করেছেন পুরো দলকে। কিন্তু তার কোন নাম নেই। অবদান রাখা সবার কার্যক্রমকে ভুলিয়ে দিয়ে শুধু নিজেদেরকে প্রতিষ্ঠা করতে চাওয়া এটা একটা বড় ভুল ছিল। আমরা আশা করব এই ভুল আমরা কাটিয়ে উঠতে পারবো।
কাউকে বাদ দিয়ে কোন কিছু করা হবে না।
তিনি আরও বলেন, আমরা সবাই মিলে সব দল, সব মত ও সব চিন্তা নিয়ে যেন একসাথে কাজ করতে পারি। এ সবের জন্য শিল্পীদের বড় একটি ভূমিকা রয়েছে। তারা যেন আমাদেরকে সেই পথটা দেখাতে পারেন। তাদের গানের ভেতর, নাটকের ও ছবি আঁকার ভেতর থেকে নতুন বাংলাদেশের পথ চলার বীজটা যেন রোপন করতে পারে। বাংলাদেশ হাজার মালভূমির দেশ। এটা কোন একটা মতের দেশ না। হাজার হাজার নদী আছে আমাদের। অস্থিরতা আছে অবশ্যই কারণ একটা বড় নিষ্পেষণের সময় গেছে। কিন্তু এই অস্থিরতা কাটবে।
তিনি নেত্রকোণা সংস্কৃতির উর্বর ভূমির শহরে একটি অডিটোরিয়াম না থাকায় দুঃখ প্রকাশ করে বলেন, আমি এসেছি ১০০ দিনের মতো হয়েছে। আমি আসার পর শুনেছি ১১টির মতো জেলায় আমাদের শিল্পকলা একাডেমী হওয়ার প্ল্যান আছে। কিন্তু সেটা বাস্তবায়িত হচ্ছে না। মাঝখানে রাষ্ট্র বদল হয়েছে। আমাদের অনেক অস্থিরতা ছিল এগুলো এখন শেষ হয়েছে।
এ ব্যাপারে আমি কথা বলেছি এবং জেনেছি একটা প্রজেক্ট হয়ে গেছে। আমরা ঢাকায় গিয়ে খবর নিয়ে দেখবো কোথায় কি আটকে আছে। সেগুলো ত্বরান্বিত করে শীঘ্রই যেন নেত্রকোণারটা আগে হয়। অগ্রাধিকার ভিত্তিতে আমরা সেটা দেখবো। এখানে ময়মনসিংহ গীতিকার ভান্ডার এখানে হবে না তো কোথায় হবে? এখানে হাজং বিদ্রোহের তীর্থভূমি সব জায়গায় তো হবে। তবে এখানে সবার আগে হওয়া উচিত।
পরিদর্শনকালে সাথে নেত্রকোণার জেলা প্রশাসক বনানী বিশ্বাস, বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমির ডেপুটি ডাইরেক্টর এস এম শামিম আকতার, বীর মুক্তিযোদ্ধা হায়দার জাহান চৌধুরী, নেত্রকোনা কালচারাল অফিসার তমাল বোসসহ সাংবাদিক ও শিল্পীরা উপস্থিত ছিলেন।