সোমবার, ১৩ জানুয়ারী ২০২৫
২৮ পৌষ, ১৪৩১

পরিক্ষামূলক সংস্করণ

সারাদেশ

ধামইরহাটে শীতের আমেজে মোড়ে মোড়ে বিক্রি হচ্ছে ভাপা পিঠা

নিউজ ডেস্ক

প্রকাশঃ ০২ ডিসেম্বর ২০২৪, ১৭:০৭

ধামইরহাটে শীতের আমেজে মোড়ে মোড়ে বিক্রি হচ্ছে ভাপা পিঠা
ছাইদুল ইসলাম (নওগাঁ) ধামইরহাট প্রতিনিধি:
ইতিহাস ঐতিহ্যের জেলা আমাদের এই নওগাঁ জেলা।শীতকাল আসলে তা অতি সহজেই ফুটে ওঠে আমাদের ঐতিহ্য ও সংস্কৃতির কিছু নমুনা, তার একটি হলো নতুন চালের নানা পদের পিঠা যার একটি হলো বহুল প্রচলিত ভাপা পিঠা।ভাপা পিঠা বাংলাদেশ ও ভারতের একটি ঐতিহ্যবাহী পিঠা,যা প্রধানত শীত কালে প্রস্তুত করা হয় ও খাওয়া হয়। এটি প্রধানত চালের গুঁড়া দিয়ে জলীয় বাষ্পের আঁচে তৈরী করা হয়।
মিষ্টি করার জন্য দেয়া হয় গুড়। স্বাদ বৃদ্ধির জন্য নারকেলের শাঁস দেয়া হয়। ঐতিহ্যগতভাবে এটি একটি গ্রামীণ নাস্তা হলেও বিংশ শতকের শেষভাগে প্রধানত শহরে আসা গ্রামীণ মানুষদের খাদ্য হিসাবে এটি শহরে বহুল প্রচলিত হয়েছে। রাস্তাঘাটে এমনকী রেস্তোরাঁতে আজকাল ভাপা পিঠা পাওয়া যায়। এই পিঠা অনেক অঞ্চলে ধুপি পিঠা নামেও পরিচিত। এর ধরনের মধ্যে রয়েছে মিষ্টি ভাপা ও ঝাল ভাপা।
নওগাঁ জেলার একেবারে উত্তরে ভারতের কোল ঘেষে ধামইরহাট  উপজেলা অবস্থিত।এ উপজেলায় শুরু হয়েছে নতুন ধান কাটার উৎসব, সেই সাথে প্রতিটি রাস্তার মোড়ে তৈরি হচ্ছে স্বাদের এই সব রকমারি পিঠা।
সরেজমিনে দেখা যায় খোদ ধামইরহাট পৌরসভার প্রায় ৯-১০টি মোড়ে তৈরি হচ্ছে স্বাদে পিঠে গুলো।সন্ধ্যা নামার সাথে সাথে মোড়ে মোড়ে জমে উঠে এই সব অস্থায়ী পিঠার দোকান, দেখা যায় অধিকাংশ দোকান চালায় বৃদ্ধা মহিলা, তাকে হয়তো সাহায্য করছে হয় মেয়ে,নাতি অথবা বৌমা।
ধামইরহাট পৌরসভার খোদ পৌরসভা ভবনের পাশে কথা একজন বৃদ্ধার সাথে জানতে পারি বৃদ্ধার নাম সাবেকুন নাহার, ২ছেলের সংসার, স্বামী মারা গেছে অনেক আগেই, অভাবের কারণেই সংসারে কিছু সাহায্যের জন্যই পিঠার এই দোকান করা।তাকে সাহায্য করছে তার বৌমা। বৃদ্ধার আরো বলেন প্রতি দিন প্রায় ৪-৫কেজি আটার পিঠা আমরা বিক্রি করি। কথায় কথায় চাচিকে বললাম চাচি কিভাবে তৈরি হয় এই পিঠা,শুনে চাচি গড়গড় করে বলে চললেন ঠিক এভাবে -প্রস্তুত প্রণালি : প্রথমে চালের গুড়া চালুনিতে করে চেলে নিতে হবে।
এরপর চালের গুঁড়ার সাথে পানি ছিটিয়ে, লবণ দিয়ে হালকা ভাবে মেখে নিন। খেয়াল রাখবেন যেন দলা না বাঁধে।এখন হাঁড়িতে পানি দিন, হাঁড়ির উপর ছিদ্রযুক্ত ঢাকনা টি রেখে চুলায় বসিয়ে দিতে হবে , চুলাটি খুব অল্প আচে রাখতে হবে,  ঢাকনির পাশে ছিদ্র থাকলে তা আটা বা মাটি দিয়ে বন্ধ করে দিন। ছোট বাটিতে মাখানো চালের গুঁড়া নিয়ে তার মাঝখানে পরিমাণমতো গুড় দিয়ে দিই।এরপর ওপরে অল্প চালের গুঁড়া দিয়ে পাতলা কাপড়ে দিয়ে বাটির মুখ ঢেকে ছিদ্রযুক্ত ঢাকনির ওপর বাটি উল্টে তা সরিয়ে দিই, ২ থেকে ৩ মিনিট অপেক্ষা করি। তারপর পিঠাটিতে নারিকেলের গুঁড় ছড়িয়ে গরম গরম খেতে দিই।
মানুষ বসে খায় এবং বাড়ির জন্য নিয়ে যায়। ধামইরহাট পৌরসভায় বৃদ্ধা সাবেকুন নাহারের মতো অসংখ্য মানুষ প্রতিদিন তৈরি করছে স্বাদের এই পিঠা।যা মানুষের অত্যন্ত পছন্দের খাবার।

এ সম্পর্কিত আরো খবর