মঙ্গলবার, ২১ জানুয়ারী ২০২৫
৭ মাঘ, ১৪৩১

পরিক্ষামূলক সংস্করণ

বানিজ্য

বাজারে সয়াবিন তেলের দারুন সংকট,বিপাকে ক্রেতা ও বিক্রেতা

নিউজ ডেস্ক

প্রকাশঃ ০৭ ডিসেম্বর ২০২৪, ০৯:৩৪

বাজারে সয়াবিন তেলের দারুন সংকট,বিপাকে ক্রেতা ও বিক্রেতা

আশু রমজান সামনে রেখে ঢাকাসহ সারাদেশের খোলা বাজারে সয়াবিন তেলের কৃত্রিম সংকট তৈরি করার অভিযোগ ‍উঠেছে। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, সিন্ডিকেট বাজার থেকে বাড়তি মুনাফা হাতিয়ে নিতে মিল পর্যায় থেকে তেলের কৃত্রিম সংকট সৃষ্টি করে ডিলারের কাছে সরবরাহ কমিয়েছে।

এতে ডিলার থেকে খুচরা বাজারে সরবরাহ কমেছে। তাই বাড়তি দামেও চাহিদামতো তেল পাচ্ছেন না খুচরা বিক্রেতারা।

শুক্রবার (৬ ডিসেম্বর) সরেজমিনে রাজধানীর একাধিক বাজারের মুদি দোকান ঘুরে দেখা যায়, সয়াবিন তেলের এই সংকটে বিপাকে পড়েছেন ক্রেতা-বিক্রেতা উভয়েই। বেশিরভাগ দোকানে বোতলজাত ভোজ্যতেল নেই। এক-দুই বা তিন লিটারের বোতলজাত তেল পাওয়া গেলেও পাঁচ লিটারের তেল খুবই সীমিত।

অনেক দোকানি শুধু নিয়মিত ও পরিচিত ক্রেতাদের কাছে তেল বিক্রি করছেন। সংকট দেখিয়ে ভোক্তার কাছে অতিরিক্ত দাম নেওয়ারও অভিযোগ রয়েছে। কিছু ক্ষেত্রে খোলা বা লুজ তেল বিক্রি করছেন অনেক দোকানি। তবে অনেক দোকানে সূর্যমুখী ও রাইস ব্র্যান তেল পাওয়া যাচ্ছে। সয়াবিনের সংকটে এসব তেলের চাহিদা বেড়েছে।

বাজারে খুচরা বিক্রেতারা জানান, সংকট দেখিয়ে এক সপ্তাহের ব্যবধানে খোলা সয়াবিন ও পাম অয়েল লিটারপ্রতি ৫ টাকা বেড়েছে। বর্তমানে খোলা পাম অয়েল ১৬০-১৬২ এবং সয়াবিন ১৭০-১৭৫ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। আর দু-একটি দোকানে এক লিটার বোতলজাত সয়াবিন মিললেও বিক্রি হচ্ছে ১৬৭-১৭০ টাকায়। এছাড়া দু-এক জায়গায় এই একই তেল ১৭৫-১৮০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে।

কারওয়ান বাজারে তেল কিনতে এসেছেন সোহাগ কাজী। তিনি জানান, বাজার ঘুরে বোতল তেল পাইনি। তাই বাধ্য হয়ে খোলা সয়াবিন তেল কিনতে হচ্ছে। একই বাজারে তেল কিনতে আসা আনিকা বলেন, বোতলজাত সয়াবিন তেল না পাওয়ায় রাইস ব্র্যান তেল নিয়ে বাড়ি ফিরছি।

 

দাম বাড়ার কারণ জানতে চাইলে বিভিন্ন তেল কোম্পানির ডিলাররা জানান, কোম্পানি থেকে আমাদের তেল সরবরাহ করছে না। যেখানে একজন ডিলারের চাহিদা ১০০ কার্টন, সেখানে কোম্পানি ১০-২০ কার্টন তেল দিচ্ছে। এ কারণে বাজারে সরবরাহ কমাতে হচ্ছে।

যদিও বিশ্ববাজারে দাম বাড়ার কারণে তেল সরবরাহ কমেছে বলে দাবি তেল আমদানিকারক ও বাজারজাতকারী প্রতিষ্ঠানগুলোর। তারা বলছেন, বিশ্ববাজারের হিসাবে লিটারে ১০-১৩ টাকা বেড়েছে। এ জন্য চাহিদার তুলনায় আমদানি কমেছে ২০ শতাংশের মতো। তাই রিফাইনিং করে তেল বাজারে সরবরাহ কম করে দিতে হচ্ছে।

তবে সম্প্রতি বিশ্বব্যাংকের প্রকাশিত প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, দেশে যেসব ভোগ্যপণ্য আমদানি করা হয়, এর প্রায় সবকটির দামই আন্তর্জাতিক বাজারে কমেছে। পাশাপাশি জ্বালানি তেলের দাম ১০০ থেকে ৭৮ ডলারে নেমে এসেছে। এতে জাহাজ ভাড়াসহ অন্য পরিবহণ খরচ কমেছে।

দেশে ডলারের দামও কমেছে। আগে আমদানিতে প্রতি ডলার কিনতে হতো সর্বোচ্চ ১৩২ টাকা করে। এখন তা কমে ১২০ টাকায় নেমে এসেছে। এসব কারণে আমদানি খরচ কমেছে। ফলে স্বাভাবিক নিয়মেই আমদানি পণ্যের দাম কমার কথা। কিন্তু বাজারে দাম কমেনি। উলটো আরও বেড়ে যাচ্ছে।

আর এনবিআরের তথ্যমতে, চলতি মাসের ২৩ দিনে চট্টগ্রাম বন্দরের ট্যাংক টার্মিনাল থেকে মোট ৬৫ হাজার টন সয়াবিন ও পাম তেল খালাস করেছেন ব্যবসায়ীরা। আরও ৪৫ হাজার টন তেল নিয়ে চারটি জাহাজ এসেছে।

কিন্তু ক্রেতা সাধারনের একটাই চিন্তা রমজানের আগে এই সমস্যা কি কমবে না আরও বাড়বে  ?

এ সম্পর্কিত আরো খবর