আইন ভেঙে সচিবালয়ে আন্দোলনের ঘটনায় ১৪ জন কর্মকর্তা-কর্মচারীকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে। গত সোমবার পৃথক পৃথক প্রজ্ঞাপনের মাধ্যমে তাদের বরখাস্তের আদেশ জারি করা হয়। সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয় ও বিভাগ সূত্রে এ তথ্য নিশ্চিত করা হয়েছে। এর আগে সন্ত্রাসবিরোধী আইনে দায়ের করা মামলায় আদালত তাদের পাঁচ দিনের রিমান্ডে পাঠান।
ঘটনাটি ঘটে গত ১০ ডিসেম্বর। ওইদিন দুপুর আড়াইটার দিকে ‘সচিবালয় ভাতা’র দাবিতে বিভিন্ন মন্ত্রণালয়ের নন-ক্যাডার কর্মকর্তা-কর্মচারীরা অর্থ উপদেষ্টা সালেহউদ্দিন আহমেদকে সচিবালয়ের ভেতরে অবরুদ্ধ করে রাখেন। প্রায় ছয় ঘণ্টারও বেশি সময় ধরে তাকে বের হতে দেওয়া হয়নি বলে অভিযোগ রয়েছে। আন্দোলনকারীরা দরজার সামনে অবস্থান নিয়ে ‘ভুয়া ভুয়া’ স্লোগান দেন এবং পরিস্থিতি উত্তপ্ত করে তোলেন।
পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে গেলে সন্ধ্যার পর আইনশৃঙ্খলা বাহিনী হস্তক্ষেপ করে। পরে রাত ৮টা ১২ মিনিটে পুলিশি নিরাপত্তায় অর্থ উপদেষ্টা সচিবালয় ত্যাগ করেন। এ ঘটনায় রাষ্ট্রীয় নিরাপত্তা ও প্রশাসনিক শৃঙ্খলা ভঙ্গের অভিযোগে সংশ্লিষ্টদের বিরুদ্ধে সন্ত্রাসবিরোধী আইনে মামলা দায়ের করা হয়।
বরখাস্ত হওয়া কর্মকর্তা-কর্মচারীদের মধ্যে রয়েছেন বাংলাদেশ সচিবালয় কর্মকর্তা ও কর্মচারী সংযুক্ত পরিষদের সভাপতি বাদিউল কবির, সহসভাপতি শাহীন গোলাম রাব্বানী ও নজরুল ইসলাম। এছাড়া স্বাস্থ্য ও পরিবারকল্যাণ মন্ত্রণালয়ের প্রশাসনিক কর্মকর্তা রোমান গাজী, স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের অফিস সহায়ক আবু বেলাল, জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের অফিস সহায়ক কামাল হোসেন, স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিবের ব্যক্তিগত কর্মকর্তা মো. তায়েফুল ইসলাম, অর্থ মন্ত্রণালয়ের অফিস সহায়ক বিপুল রানা বিপ্লবসহ বিভিন্ন মন্ত্রণালয়ের আরও কয়েকজন কর্মকর্তা-কর্মচারী রয়েছেন।
বরখাস্তের আদেশে বলা হয়, সরকারি কর্মচারী হিসেবে দায়িত্ব পালনের ক্ষেত্রে তারা শৃঙ্খলা ভঙ্গ করেছেন এবং আইন অমান্য করে রাষ্ট্রীয় কার্যক্রমে বাধা সৃষ্টি করেছেন। বিষয়টি তদন্তাধীন থাকায় বিধি অনুযায়ী তাদের সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে।
সরকারি সূত্রগুলো বলছে, সচিবালয়ের মতো গুরুত্বপূর্ণ রাষ্ট্রীয় স্থাপনায় এ ধরনের ঘটনা প্রশাসনিক শৃঙ্খলার জন্য বড় হুমকি। তদন্ত শেষে দোষীদের বিরুদ্ধে আইন অনুযায়ী পরবর্তী ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে জানানো হয়েছে।