ভারত থেকে প্রবাহিত গঙ্গা নদী চাঁপাইনবাবগঞ্জে পদ্মা নাম ধারণ করে বাংলাদেশে প্রবেশ করেছে। এই নদী প্রতি বছর বর্ষা মৌসুমে ভয়াবহ ভাঙনের সৃষ্টি করে, যা তীরবর্তী জনগণের ভিটেমাটি ও আবাদি জমি গ্রাস করে তাদের নিঃস্ব করে দিচ্ছে।
চাঁপাইনবাবগঞ্জ সদর উপজেলার নারায়ণপুর ইউনিয়ন পরিষদ বাজার থেকে শিবগঞ্জের দুর্লভপুর ইউনিয়নের বোগলাউড়ি পর্যন্ত এলাকা ভাঙনে সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত।
এ পরিস্থিতিতে পদ্মার তীর রক্ষায় স্থায়ী বাঁধ নির্মাণের উদ্যোগ নিয়েছে পানি উন্নয়ন বোর্ড (পাউবো)। “পদ্মা নদীর তীর রক্ষা” শীর্ষক একটি প্রকল্পের প্রস্তাব প্রণয়ন করে সংশ্লিষ্ট দপ্তরে পাঠানো হয়েছে, যার আনুমানিক ব্যয় ধরা হয়েছে ১ হাজার ৭৬৯ কোটি ১০ লাখ টাকা।
এই প্রকল্প বাস্তবায়িত হলে ২৫.৩৫ কিলোমিটার এলাকায় বাঁধ নির্মাণ ও ৪ কিলোমিটার নদী ড্রেজিংয়ের মাধ্যমে চর অপসারণ করা হবে। এতে নৌ-যোগাযোগ, কৃষি উৎপাদন বৃদ্ধি, ভাঙনের হাত থেকে সরকারি-বেসরকারি স্থাপনা ও কৃষিজমি রক্ষা এবং মৎস্য সম্পদের উন্নয়ন সম্ভব হবে।
নির্দিষ্টভাবে, শিবগঞ্জের দুর্লভপুর ও মনাকষা এলাকায় পদ্মার বাম তীরে ১১.১৫০ কিলোমিটার, নারায়ণপুর ও পাকা এলাকায় ১০.৮৮০ কিলোমিটার এবং চর আশাড়িয়াদহ এলাকায় ডান তীরে ৩.৭৬০ কিলোমিটার স্থায়ী বাঁধ নির্মাণ করা হবে। এছাড়া দুর্লভপুর এলাকায় ৪.২৫০ কিলোমিটার নদী ড্রেজিংয়ের মাধ্যমে নৌপথ সুগম করা হবে।
এ প্রসঙ্গে অন্তর্বর্তী সরকারের যুব ও ক্রীড়া উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ তার ফেসবুকে লিখেছেন, “যেখানে প্রতিবেশী দেয় কষ্ট, সেখানেই আমরা গড়ছি প্রতিরোধ। বাঁধ শুধু পানি ঠেকাবে না—এটি হবে বঞ্চনার জবাব, মানুষের বাঁচার আশ্রয়।”
তার এই বক্তব্যে প্রতিবেশী দেশের কারণে সৃষ্ট চাপ ও ভাঙনের দুর্ভোগ মোকাবিলায় স্থানীয় জনগণের সংগ্রাম ও প্রতিরোধের ইঙ্গিত ফুটে উঠেছে। এই প্রকল্প বাস্তবায়িত হলে পদ্মা তীরের লক্ষাধিক মানুষ তাদের জীবন-জীবিকা ও ভিটেমাটি রক্ষার পাশাপাশি অর্থনৈতিক সম্ভাবনার নতুন দিগন্ত খুঁজে পাবে।

এই সময়ের মধ্যে নির্বাচন করা সম্ভব বলে কি আপনি মনে করেন?