রাশিয়া বাংলাদেশে আরও বেশি গম ও সার রপ্তানি করতে আগ্রহ প্রকাশ করেছে। রাশিয়ার উপ-প্রধানমন্ত্রী আলেক্সেই ওভারচুক আজ বৃহস্পতিবার চীনের হাইনান প্রদেশের বোয়াও শহরে বোয়াও ফোরাম ফর এশিয়া সম্মেলনের ফাঁকে বাংলাদেশের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূসের সঙ্গে বৈঠকে এই ইচ্ছা প্রকাশ করেন।
বৈঠকে আলেক্সেই ওভারচুক বলেন, ‘রাশিয়া বাংলাদেশে আরও গম ও সার রপ্তানি করতে চায়।’ এটি দুই দেশের মধ্যে অর্থনৈতিক সহযোগিতা বাড়ানোর ক্ষেত্রে একটি ইতিবাচক উদ্যোগ বলে তিনি মন্তব্য করেন।
এই উচ্চপর্যায়ের বৈঠকে দুই নেতা পারস্পরিক স্বার্থ-সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন বিষয় নিয়ে আলোচনা করেন। আলোচনার মূল বিষয়বস্তু ছিল রাশিয়ার অর্থায়নে নির্মিত রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্রের কার্যক্রম, রাশিয়া থেকে বাংলাদেশে গম ও সার আমদানির পরিকল্পনা এবং গ্যাজপ্রমের গ্যাস অনুসন্ধান কার্যক্রম।
অধ্যাপক ইউনূস বৈঠকে জানান, রূপপুর বিদ্যুৎ কেন্দ্রের অর্থ সংক্রান্ত বিষয়গুলো ইতোমধ্যে সমাধান হয়েছে এবং বাংলাদেশ ঢাকায় একটি নির্দিষ্ট অ্যাকাউন্টে অর্থ পরিশোধ করছে। তিনি আরও জানান, রূপপুর বিদ্যুৎ কেন্দ্র এ বছরের শেষের দিকে পরীক্ষামূলকভাবে বিদ্যুৎ উৎপাদন শুরু করতে পারে।
বাংলাদেশের প্রধান উপদেষ্টা বলেন, ‘বাংলাদেশ রাশিয়া থেকে আরও বেশি গম ও সার আমদানি করবে।’ তিনি রাশিয়ার বৃহৎ জ্বালানি সংস্থা গ্যাজপ্রমকে বাংলাদেশের অফশোর ও অনশোর গ্যাস অনুসন্ধান কার্যক্রমে আরও বেশি সম্পৃক্ত হওয়ার আহ্বান জানান।
বৈঠকে আলেক্সেই ওভারচুক দুই দেশের জনগণের মধ্যে সম্পর্ক বৃদ্ধির ওপর গুরুত্বারোপ করেন এবং বলেন, ‘আরও বেশি বাংলাদেশি শিক্ষার্থী রাশিয়ায় পড়াশোনা করতে যাক, সেটি আমরা দেখতে চাই।’
বাংলাদেশ ও রাশিয়ার মধ্যে অর্থনৈতিক সহযোগিতা ও সম্পর্ক জোরদারের লক্ষ্যে এই বৈঠকটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ বলে মনে করা হচ্ছে। বিশেষ করে, গম ও সারের মতো গুরুত্বপূর্ণ কৃষি উপকরণ আমদানির বিষয়ে রাশিয়ার আগ্রহ বাংলাদেশের খাদ্য ও কৃষি নিরাপত্তার ক্ষেত্রে ইতিবাচক ভূমিকা রাখতে পারে।
এছাড়া, রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্রের কার্যক্রম নিয়ে ইতিবাচক অগ্রগতি এবং গ্যাজপ্রমের গ্যাস অনুসন্ধান কার্যক্রমের প্রসার বাংলাদেশের জ্বালানি নিরাপত্তার ক্ষেত্রে নতুন সম্ভাবনা তৈরি করতে পারে বলে ধারণা করছেন বিশেষজ্ঞরা।
বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন পররাষ্ট্র উপদেষ্টা তৌহিদ হোসেন, জ্বালানি উপদেষ্টা ফাওজুল কবির খান এবং প্রধান উপদেষ্টার উচ্চ পর্যায়ের প্রতিনিধি ড. খলিলুর রহমান।
বিশ্লেষকরা মনে করছেন, রাশিয়ার সঙ্গে এই অর্থনৈতিক ও কৌশলগত সহযোগিতা দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ককে আরও জোরদার করবে এবং বাংলাদেশের খাদ্য, কৃষি ও জ্বালানি খাতকে আরও সমৃদ্ধ করবে।

বাংলাদেশের পুলিশ, র্যাব ও আনসারের ড্রেস নিয়ে আপনার মতামত কী?